আসুন, অহিংসতার শপথ নেই
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২রা অক্টোবর ২০১৭, সোমবার
| সকাল ১১:৫১
বিদেশ
ই-বার্তা।। কল্পনা করুন এমন একটি পৃথিবীর কথা, যেখানে বিন্দুমাত্র সহিংসতা নেই। নেই কোনো যুদ্ধ, রেষারেষি অথবা মারদাঙ্গা। বহু বছর আগে এরকমই একটি পৃথিবী কল্পনা করেছিলেন একজন সাধারণ মানুষ। যিনি তাঁর এই ভাবনাকে নিজের বিশ্বাসে ধারণ করে হয়ে উঠেছেন অসাধারণ। পৃথিবীকে যুদ্ধের জায়গা নয়, বরং ভালোবাসার জায়গায় পরিণত করায় ছিলো তাঁর একান্ত চেষ্টা। তিনি আর কেউ নন, মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী। ভালোবেসে যাকে ডাকা হয় বাপু। আজ তাঁর ১৪৮তম জন্মদিবস। আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারানো মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনকে জাতিসংঘ ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।
বিশ্ব ইতিহাসে একজন অহিংস সংগ্রামী হিসেবে পরিচিত মহাত্মা গান্ধী। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলন সংগ্রামসহ প্রতিটি আন্দোলনেই অহিংস সংগ্রাম করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, সবসময় সহিংসতাই একমাত্র সমাধান নয়, বরং অহিংস আন্দোলনেও সফলতা অর্জন সম্ভব। সেই প্রেক্ষাপটেই, বিশ্বে অহিংস আন্দোলনের সফল নেতা মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনটিকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
-আজ সেই অহিংস দিবস
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এমন একটি দিবস পালনের খুবই প্রয়োজন। চারিদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে সহিংসতা। কোনো সীমারেখা নেই এই সহিংসতার। সহিংসতার বিপরীতে অবস্থান করে অহিংসতা বা শান্তি। পৃথিবীর শান্তির প্রত্যাশায় পালন করা হয় আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস, ইংরেজিতে যাকে বলা হয়, “ইন্টারন্যাশনাল নন-ভায়োলেন্স ডে”।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে এখন যেভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দানা বেধে উঠেছে সেখানে আজকের এ দিবস পালন সত্যিকার অর্থেই অনেক গুরুত্ব বহন করে। বর্তমান সহিংসতায় যেমন বাদ যাচ্ছে না খ্রিস্টান, ইহুদি, বৌদ্ধ, হিন্দু ধর্মের দেশগুলো, তেমনি বাদ যাচ্ছে না মুসলিম দেশগুলোও। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেমন চলছে উত্তেজনা, তেমনি সিরিয়ায় আইএস নিধনের নামে চলছে শক্তিধর দেশগুলোর আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ দিয়ে শক্তির মহড়া। অপরদিকে সৌদি আরব, ইরান, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো রয়েছে নানা সমস্যায়। বাদ নেই শান্তিপুরীখ্যাত ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোও।
আজকের আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস পালনের এইদিনে সবাইকে এই বিষয়ে শপথ নেওয়া প্রয়োজন যে, সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিলে মানুষে মানুষে হিংসা হানাহানি দিন দিন বেড়েই চলে, এতে শুধু সম্পদ ও জানমালের ক্ষতিই হয়। কিন্তু কারো কোনো লাভ হয় না। কাজেই প্রত্যেকটি বিষয়কে রাজনীতিকীকরণ না করে বিশ্ব শান্তির স্বার্থে তা পরিহার করা উচিত। কারণ রাজনীতি তো মানব কল্যাণের জন্যই। আসুন, শুধু আজকের দিনে নয়, জীবনের প্রতিটি দিনে আমরা সবাই সহিংসতা পরিহার করে অহিংস বিশ্ব গঠনে কাজ করি।
আগের খবর পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানব