বিশ্ব রাজনীতিতে ভেটোদাতাদের দৈনন্দিন জীবনী (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট)


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৩রা অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার  | সন্ধ্যা ০৭:৫৫ বিদেশ

ই-বার্তা ।। মশিউর রহমান ।। বিশ্ব রাজনীতিতে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাধর পাঁচটি দেশ আছে, যারা সার্বিক সিদ্ধান্তে বাঁধা দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এই ক্ষমতাটাই হল ভেটো ক্ষমতা। জার ফলশ্রুতিতে অনেক সময় বিশ্ব রাজনীতির অনেক বিষয়ই পরিবর্তিত হয়।

বিশ্ব রাজনীতিতে যে পাঁচটি দেশ ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রাখে তার মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। বাকি দেশ গুলো হল- চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্য। এসব দেশের প্রধানরা সব সময়ই সমগ্র বিশ্বের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সমাদৃত। তাই এদের গোপনীয়তাটাও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এসব কারণে সাধারণ মানুষের এদের সম্পর্কে খুব একটা জানা সম্ভব হয় না। কিন্তু কার না জানতে ইচ্ছে করে যে একজন ক্ষমতাধর দেশের প্রধানের দৈনন্দিন জীবন, বাকি সাধারণ মানুষ থেকে কতটা আলাদা নাকি একই। তাই গোপনীয়তা বজায় রেখে যেটুকু জানা যায়, তা জানা টা কি খুব একটা অন্যায় হবে? এটুকু তো আমরা জানতেই পারি।

পূর্বের সোভিয়েত ইউনিয়ন যা বর্তমানে রাশিয়া। ১কোটি ৭৫লাখ ৪০০ বর্গ কিলোমিটারের এ দেশটি বিশ্বের সর্ব বৃহৎ দেশ। তাই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টেরও বেশ বড় ও বারতি সুবিধা আছে।

পুতিন ৭ অক্টোবর ১৯৫২ সালে রাশিয়ার লেলিনগ্রাডে জন্মগ্রহণ করেন। পুতিন ১৯৬০-১৯৬৮ সালের মধ্যে প্রাইমারি স্কুলে পড়াশুনা করেছেন। সেখান থেকে ১৯৭০ সালে পড়া শেষ করেন। ১৯৭০ সালে পুতিন লেনিনগ্রাদ স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৫ সালে ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে পুতিন মস্কোর কেজিবি স্কুল নং-১ এ পড়াশুনা করেন। পুতিন রুশ অর্থোডক্স গির্জার সদস্য। জুডু ও ক্যারাটিতে অনেক দক্ষ পুতিন। মাত্র আঠার বছর বয়সে ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেন।

প্রত্যহিক জীবনে পুতিন সবসময়ই একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। কোয়েলের ডিম, ফলের জুস, কটেজ চিজ নামক এক প্রকার চিজ সহ আনুসাঙ্গিক খাদ্য উপাদান দিয়ে তিনি তার নাশতা করেন। নাশতার পর সুইমিং পুলে সাতার কেটে


জিম করেন পুতিন। ইন্টারনেট ব্যবহারে যথেষ্ট অপছন্দ রয়েছে পুতিনের। এখনো ল্যান্ডফোন ব্যবহার করেন। লেখার জন্যে কাগজ কলম ব্যবহার করেন। বাহিরে চলাচলের জন্য ক্যাডিল্যাক ওয়ান নামের স্পেশাল ব্র্যান্ডের গাড়ি ব্যবহার করেন। মজার ব্যপার হল সারা পৃথিবীতে এই গাড়িটির সংখ্যা মাত্র একটি।

বিদেশ ভ্রমনের জন্য বিশের ব্যক্তিগত প্লেন ব্যবহার করেন। বিদেশ ভ্রমণের সময় নিরাপত্তার খাতিরে তার সঙ্গে থাকে নিজস্ব বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও ওয়েটার। রাশিয়ান ট্রাভেল গাইড ক্রেমিলিনের অনুমোদন ছাড়া তিনি বিদেশী কোন খাবার গ্রহণ করেন না। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে তার প্রথম সফর সঙ্গি তার পোশা কুকুর কনি।

মস্কোর বাহিরে একটি গোপনীয় স্থানে তিনি বসবাস করেন। রাশিয়ার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয় যেই ভবন থেকে, সেই সেন্ট পিটার্সবার্গ এলাকাতেই একসময় শৈশব কেটেছিল পুতিনের। রিচার্ড সাকভা তার পুতিন : রাশিয়ান চয়েস নামের বইতে দাবি করেছেন, সেন্ট পিটার্সবার্গের সেই সব ভবনের সিঁড়িতে দৌড়াদৌড়ি করে একসময় ইঁদুর মারতেন পুতিন।

পুতিন ২৮ জুলাই, ১৯৮৩ তারিখে কালিনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী ও সাবেক বিমানবালা লিদমিলা শ্রেবনেভাকে বিয়ে করেন। মারিয়া পুতিনা ও ইয়েকাতেরিনা পুতিনা নামি দুই কন্যা রয়েছে। মেয়েদের ব্যপারে অনেক বেশি গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেন পুতিন। শোনা যায়, স্কুল কলেজে পড়ালেখা করার সময় ছদ্দ নাম ও বাসার ঠিকানার গোপনীয়তা রক্ষা করে চলতেন পুতিন কন্যারা।

রুশভাষী হিসেবে ভ্লাদিমির পুতিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে জার্মান ভাষায়ও কথা বলতে পারেন। বাড়ীতে তিনি ও তাঁর পরিবার জার্মান ভাষায় কথা বলে থাকেন। প্রেসিডেন্ট হবার পর জানা যায় যে, তিনি ইংরেজি ভাষা শিক্ষাগ্রহণ করছেন। তাঁকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সরাসরি বুশ ও ইংরেজী ভাষীদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে দেখা যায়।

কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনার সময় তিনি এখনও অনুবাদকের সহায়তা গ্রহণ করে চলেছেন। পুতিনকে প্রকাশ্যে ইংরেজিতে প্রথমবারের মতো কথা বলতে দেখা যায় ২০০৩ সালে। গাড়ি চালাতে পুতিন খুব ভালোবাসেন। মন ভালো থাকলে ১৫০ কিলো প্রতি ঘণ্টা বেগেও গাড়ি চালান পুতিন।

সর্বশেষ সংবাদ

বিদেশ এর আরও সংবাদ