পৃথিবীর সুন্দর দশটি রাজপ্রাসাদ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৮ই অক্টোবর ২০১৭, রবিবার  | সন্ধ্যা ০৬:৩০ আন্তর্জাতিক

ই- বার্তা।। একসময় বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই বিভিন্ন রাজার রাজত্ব ছিল। ছিল তাঁদের নিজেস্ব অঞ্চল, প্রোজা, দাসদাসী, লোকবল, রাজত্ব ও রাজপ্রাসাদ।ছিল প্রত্যেকের নিজেস্ব সংস্কৃতি, চিহ্ন বা, প্রতিক। প্রত্যেক রাজাই চাইতেন তার রাজত্ব বিস্তার করতে। শাসন করতেন আলিশান রাজপ্রাসাদ থেকে। প্রত্যেক রাজার রাজপ্রাসাদের ছিল ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য। সেরকম বিশ্ব সেরা দশটি সুন্দর রাজপ্রাসাদ সম্পর্কেই আজকে জানাচ্ছি।

১. ভার্সাই প্রাসাদ, প্যারিস, ফ্রান্স
সম্রাট ত্রয়োদশ লুই এটি নির্মাণ শুরু করেন তার ছেলে চতুর্দশ লুই এটাকে আরও বড় ও সম্প্রসারিত করেন। দুই হাজার কক্ষবিশিষ্ট তার কয়েকগুণ দরজা-জানালাবিশিষ্ট এ প্রাসাদটির সংগ্রহে আছে ৬,১২৩ টি পেইন্টিং ও ২,১০২ টি ভাস্কর্য। ফ্রান্সের অসীম ক্ষমতাধর রাজতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে দাড়িয়ে আছে ভার্সেই।

২. হিমেজি প্রাসাদ, জাপান
জাপানের সবচেয়ে বড় প্রাসাদ এবং পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এই প্রাসাদটি। সম্রাট আকামাতসু নরিমুরা ১৩৩৩ সালে এর নির্মাণ শুরু করেন। ৮৩টি অট্টালিকা নিয়ে এই প্রতিরক্ষা কেল্লাটি তৈরি হয়েছিল। এই প্রাসাদটিকে প্রায়ই ‘হাকারু জো’ নামে অভিহিত করা হয় যার অর্থ দাড়ায় ‘সাদা বকের প্রাসাদ’।

৩. শ্যাতো দে ভিনসেনস্, ফ্রান্স
ফ্রান্সের প্যারিসের ভিনসেনস্ শহরে এই কেল্লাটি অবস্থিত। এটা ১৩৪০ থেকে ১৪১০ এর মধ্যে নির্মিত হয়। রাজা সপ্তম লুই শিকার করার জন্য বের হলে এ কেল্লাটি ব্যবহার করতেন। প্রাসাদটির চতুর্দিক একটি পরিখা দ্বারা বেষ্টিত। প্রাসাদটিতে প্রবেশের জন্য তিনটি বড় বড় প্রবেশদ্বার রয়েছে।

৪. এইলিয়ান ডোনান
স্কটল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে একটি দ্বীপের মধ্যে এ রাজপ্রাসাদটি তৈরি করা হয়েছে। ১৭১৯ থেকে শুরু করে ২০০ বছরের মত এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। জেকোবাইট বিদ্রোহের পর রাজপ্রাসাদ অনেকটা ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়। ১৯১১ সালে আবার পুরোনো অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়।

৫. বজনিক প্রাসাদ, স্লোভাকিয়া
স্লোভাকিয়ার বজনিক শহরে একটি পাহাড়ের উপর এ প্রাসাদটি তৈরি করা হয়। ১৯৭০ সালে এটাকে জাতীয় ও সাংস্কৃতিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করে স্লোভাকিয়া সরকার। প্রথমদিকে এ দুর্গটি কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছিল পরে আবার পাথর দিয়ে পুন:নির্মাণ হয় ত্রয়োদশ শতকে।

৬.


লে মন্ত সেইন্ট মিচেল, ফ্রান্স
ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্যুসোনান নদীর নদীর আঁধা মাইল দূরে এটি অবস্থিত। বিশপ আব্রানচেস্-এর অনুরোধে এটি প্রথম দিকে গীর্জা হিসেবে ব্যবহার শুরু হয় ৭০৯ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর। ফরাসী বিপ্লবের সময় এটি জেলখানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

৭. রোকা দেলা গুয়েইতা, সান মারিনো, ইতালি
তিনটি টাওয়ার বিশিষ্ট এই রাজপ্রাসাদটি থেকে ইতালির সান মারিনোর পুরোটি দেখা যায়। যদিও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে তবে স্থাপনাটি ১১ শতকে নির্মিত হয়েছিল। এখানে একটি ওয়াচ টাওয়ার ও বেল টাওয়ার রয়েছে। আরও আছে সেন্ট বারবারা চ্যাপেল ও একটি দুর্গ যেটি বন্দিশালা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

৮. নুশোয়ানসেই প্রাসাদ, বেভারিয়া, জার্মানি
এ রাজপ্রাসাদটি জার্মানির বেভারিয়া অঞ্চলের শোয়াংগুতে অবস্থিত। ১৮৮৬ সালে রাজা লুডউইগের মৃত্যুর পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয় পর্যটকদের জন্য। ডিজনীল্যান্ডের ‘স্লিপিং বিউটি রাজপ্রাসাদ’টি তৈরির ক্ষেত্রে এর অনুকরণ করা হয়েছে।

৯. পার্টারগফ, সেইন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া
এটাকে অনেক সময় রাশিয়ার ভার্সেই বলা হয়। সেন্ট পিটার্সবার্গের সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় স্থাপনা হচ্ছে এটি। বলা হয়ে থাকে সম্রাট পিটার দ্যা গ্রেট ভার্সেই থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে এই প্রাসাদটি তৈরি করেন। রাজপ্রাসাদটির ‘পার্টারগফ’-এর অনুবাদ করলে দাড়ায় ‘পিটারের দরবার’। অনেকগুলো বাগান, ঝর্ণা ও পুকুর পরিবেষ্টিত এই অসাধারণ রাজপ্রাসাদটি।

১০. গ্র্যান্ড প্যালেস, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
এই অনন্য স্থাপনাটি ১৭৮২ সালে নির্মিত হয় এবং প্রায় ১৫০ বছর ধরে ছিল রাজ পরিবারের বাসস্থান। যদিও সদ্য প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদজে চিত্রালদা প্রাসাদে থাকতেন তবে এই প্রাসাদটি বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করতেন।

অসাধারণ সৌন্দর্যে ঘেরা ঐসব রাজপ্রাসাদগুলোতে ভ্রমণ করলে আপনি হারিয়ে যাবেন ইতিহাসের অলিতে গলিতে! একই সাথে বিভিন্ন রাজপ্রাসাদ বা ঐতিহাসিক স্থাপনা পরিদর্শন করলে আমরা একটি জাতি বা সম্প্রদায়ের অতীত অনুসন্ধান, তাদের বিকশিত হওয়ার পরিভ্রমণটা নিয়ে ধারণা লাভ করি। এটা ইতিহাস ঐতিহ্য চেতনা জাগ্রত করার সাথে সাথে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতা বাড়ায়।

সর্বশেষ সংবাদ

আন্তর্জাতিক এর আরও সংবাদ