ই-বার্তা।। নোবেল পুরস্কার। বিশ্বের অন্যতম সম্মানীয় পুরস্কার। বলা হয়ে থাকে নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সবথেকে সম্মানিত পুরস্কার। ১৯০১ সালে পুরস্কারটি চালু হওয়ার পর থেকে গত বছর পর্যন্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৮৮১ জন্য ব্যক্তি জিতেছেন ভীষণ সম্মানজনক এ পুরস্কার। নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের বলা হয় নোবেল লরিয়েট।

১৯৮০ সাল থেকে ১৮ ক্যারেট সবুজ স্বর্ণের ধাতবের ওপর ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া পদক দেওয়া হচ্ছে নোবেল বিজয়ীদের। এ ছাড়া একটি সনদ এবং মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয় সভ্যতার অগ্রযাত্রায় নানাভাবে অবদান রাখা মহানায়কদের। ১৯৮০ সালের আগ পর্যন্ত নোবেল বিজয়ীরা যে পদক পেতেন, সেটা ছিল ২৩ ক্যারেট স্বর্ণের।

টাকার চেয়ে সম্মান অবশ্যই বড়। কিন্তু নোবেল এমনই এক পুরস্কার, যেখানে টাকার অঙ্কটাও হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। গত বছর নোবেল বিজয়ীদের নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা প্রায় আট কোটি টাকা। নোবেল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বছর নগদ অর্থের পরিমাণ হবে ১১ লাখ ডলার, অর্থাৎ ৯ কোটি টাকার কিছু বেশি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সুইডেনের স্টকহোমে নগদ অর্থপুরস্কার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় নোবেল ফাউন্ডেশন।

জীবদ্দশায় করে যাওয়া অনেকগুলো উইলের মধ্যে শেষ উইলে নোবেল উল্লেখ করেন যে তাঁর সব সম্পদ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে, যাঁরা পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্যে মানবতার স্বার্থে কাজ করবেন। এ জন্য নোবেল তাঁর মোট সম্পদের ৯৪ শতাংশ উইল করে যান, যা এখন নোবেল পুরস্কার হিসেবে স্বীকৃত।

জীবদ্দশায় ৩৫৫টি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছিলেন আলফ্রেড নোবেল। তবে, পারমাণবিক বোমা আবিস্কারের জন্যই সবচেয়ে বেশি আলচিত ও পরিচিত আলফ্রেড নোবেল।

সুইডিশ এ বিজ্ঞানীর বড় ভাই লুডভিগ ১৮৮৮ সালে ফ্রান্সে বেড়াতে গিয়ে মারা যান। কিন্তু ফরাসি এক দৈনিক ভুল করে আলফ্রেড নোবেল মারা গেছেন ভেবে নিয়ে শিরোনাম করে, মৃত্যুর সওদাগর মারা গেছেন। যেহেতু নোবেলের অধিকাংশ আবিষ্কারই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, তাই এমন শিরোনাম।

নোবেল তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, মৃত্যুর পর ইতিহাস তাঁকে কীভাবে মনে রাখবে। আর তাই সেই পরিস্থিতির পরিবর্তনের উদ্দেশ্যেই তিনি তার সম্পদের উইলের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেন।