শিশুশ্রম বন্ধ হলে অনেক শিশুই না খেয়ে থাকবে


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১লা মে ২০১৭, সোমবার  | সন্ধ্যা ০৬:০৮

আকরাম হোসেন।। শিরোনাম দেখে ভাবছেন এটা কেমন কথা। কিন্তু এটাই সত্য। দেশে কয়েক লাখ পথশিশু আছে যাদের দেখাশোর কেউ নেয়। সরকাররে পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়। অথচ এই সব শিশুদের সহযোগীতার জন্য বহিবিশ্ব থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে সরকার। কিছু কাজ যে হয় না তেমন কিন্তু না। য়ে সব দেশ বা সংস্থা থেকে র্অথ আসে তাদেরকে দেখানোর জন্য কিছু ডাটা তৈরি করতে হয়। বঞ্চিত হয় শিশুরা, যার করণে এইসব শিশুদের নিজের উপার্জনের অর্থ দিয়ে চলতে হয়। শিশুশ্রম বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে এইসব শিশুদের থাকতে হবে অনিশ্চয়তাই।

মে দিবস আসলে ঘুরে ফিরে শিশুশ্রম সামনে চলে আসে। সমাজের সব শ্রেণী থেকে শিশুশ্রম বন্ধের দাবি তোলা হয়। দাবি তোলা হয় শিশুকে কাজে নিয়োগকারীর আইনের আওতাই এনে বিচারের সম্মুখীন করা। কিন্তু কত জন এর প্রভাব নিয়ে চিন্তা করে? আসলে সমাজে এর প্রভাব কি হবে? কোন শিশুরা এই আইনের আওতাই থাকবে? আইনের মাধ্যমে শিশুরা কি সুবিধা পাবে? ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে ফুটপাতে যে কয়েক লাখ শিশু থাকে তাদের কি হবে?

২০০৫ সালে ইউনিসেফ পথশিশুদের এক জরিপে বলেছে, বাংলাদেশে মোট ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৮ পথশিশু রয়েছে। বর্তমানে ১১ লাখ ছাড়িয়েছে আর ২০২৪ সাল নাগাদ এ সংখ্যা হবে ১৬ লাখ।

যদি পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করে বা দীর্ঘ মেয়াদী ও কার্যাকর কোন পদক্ষেপ না নিয়ে শিশুশ্রম বন্ধ করা হয়। তাহলে অবশ্য সেটা শিশুদের সাথে অবিচার করা হবে, ক্ষেত্র বিষেশে ওদেরকে আরও পিছনে ফেলা হবে। কিছু শিশুর জীবনে অভিশাপ হয়ে আসবে শিশুশ্রম আইন। দুই বছর ঢাকার পথশিশুদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতায় সেটাই বলে। দুই বছরে অনেক শিশুর সাথে পরিচয় হয়েছে যাদের অধিকাংশই ফুটপাতে থাকে। তাদের কেউ কেউ বাবা-মায়ের সাথে থাকে তবে বাবা - মায়ের কাজ করার মত শারীরিক সামর্য্ত নেই। কেউ দূরসম্পর্কের কোন আত্নীয়ের সাথে থাকে। কোন কোন শিশুর সেটাও নেই। এই সব শিশুদের কেউ কেউ ভিক্ষা করে থাকলেও অধিকাংশই কোন না কোন কাজ করে তাদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা মেটাই। অন্যান্য মৌলিক চাহিদাতো অনেক দূরের ব্যাপার।

আমার গ্রামেও দেখেছি অনেক পরিবারের, কোর উপায় না থাকায় শিশুদের আয়ের টাকায় কোন রকম অমানবিক জীপন যাপন করতে। এই সব পরিবারের বাবা মাকে রেখে চলে গেছে অথবা মারা গেছে। মফস্বলে বাড়ীর বাইরে মহিলাদের কাজ করার জায়গাও শহরের মত নেয। শিশুকে কাজের সন্ধানে বের হতে হয়। কখনও অসুস্থ বাবা অথবা মায়ের ঔষুধ কিনতে হয়। শিশুশ্রম বন্ধ করলে এইসব পরিবারের দ্বায়ীত্ব কে নিবে?

পুর্নবাসন না করে আইনের মাধ্যমে শিশুশ্রস বন্ধ করা হলে কিছু শিশু যেমন মানবিক বিপর্যয়ে থাকবে, আবার থাকবে অনিশ্চয়তায়। অন্ধকার থেকে নিয়ে গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে ফেলা ছাড়া আর কিছু না। অনেকটা গ্রামের ভাষায় বলতে গেলে, ভাঁত কাপর দেওয়া মুরোদ নাই আছে লাত্তি গুতার মরোদ। অনেকটা এর মতই হচ্ছে বিষয়ট। যদি কিছু করার থাকে অবশ্যই আগে পুর্নবাসন ও কার্যকারী কোন পদক্ষেপ। পরে আইন।

সর্বশেষ সংবাদ

১ এর আরও সংবাদ