বুদ্ধিমান প্রাণী- হাতি
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ৫ই অক্টোবর ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার
| দুপুর ০২:২৬
দেশ
ই-বার্তা।। হাতি এই গ্রহের সবচেয়ে বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী। একইসাথে হাতি অনেক রহস্যময়ও বটে। ভাবছেন কেন বলছি এমন কথা? হাতি যে একটি বুদ্ধিমান প্রাণী তা এই প্রাণীটির অনেক গোপনীয় বিষয় আছে যা জানলেই আপনি বুঝবেন। এই বৃহদাকার প্রাণীটির সম্পর্কে এমনই কিছু মজার ও অদ্ভুত তথ্য দেয়া হোলো শুধু আপনাদের জন্য।
১। স্থলজ জীবজন্তুর মধ্যে হাতির মস্তিস্ক সবচেয়ে বড় (৫ কিলোগ্রাম)। হাতির বিষাদ, হাস্যরস, সহানুভূতি, সহযোগিতা, আত্মসচেতনতা, সরঞ্জাম ব্যবহার এবং চমৎকার শেখার ক্ষমতা আছে যা মানুষের সহজাত গুণ।
২। হাতির মজার কিছু অভ্যাস আছে যা অনেকটা মানুষের মতই। মানুষের মত হাতিরও সান ক্রিম প্রয়োজন হয়।
৩। হাতি পরিবারের নেতৃত্ব দেয় মহিলা হাতি। হাতির সামাজিক কাঠামো অন্য জীবজন্তুর থেকে আলাদা। একটি মহিলা হাতির নেতৃত্বে ২৫ টি হাতি একটি পরিবারের মত একসাথে বাস করে, একে পশুপাল বলে। হাতি পরিবারে বয়স্ক হাতির প্রভাব অনেক বেশি থাকে, হাতি পরিবারে বয়স ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়। পুরুষ হাতি ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে পরিবার ত্যাগ করে বা অন্যভাবে বলা যায় যে, হাতি কিশোর বয়সে নিজ পরিবার ত্যাগ করে সঙ্গীর সন্ধানে অন্য ছোট পরিবারের সাথে থাকতে শুরু করে।
৪। হাতি তাদের মৃতদের সম্মান দেয় এবং মৃতদের জন্য আচার-অনুষ্ঠান করে। সাধারণত একটি হাতি ৬০ থেকে ৮০ বছর বাঁচে। যদি কোন হাতি অসুস্থ হয় তখন তাদের দলের অন্য সদস্যরা খাবার এনে দেয় এবং তাকে দাঁড়াতে সাহায্য করে। যদি হাতিটি মারা যায় তাহলে পালের সবাই শান্ত হয়ে যায়। তারা মৃত হাতির জন্য অগভীর কবর খনন করে এবং ধুলা মাটি ও গাছের ডালপালা দিয়ে ঢেকে দেয়। এই কবরের সামনে তাঁরা কিছুদিন অবস্থান করে। মৃত হাতির সঙ্গীর মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ দেখা যায়।
৫। হাতির গর্ভকালীন সময় প্রায় দুই বছর। পৃথিবীর স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে হাতির গর্ভকালীন সময় সবচেয়ে দীর্ঘ, যা ২২ মাস স্থায়ী হয়। মানুষের বাচ্চার ওজন সর্বোচ্চ ৭ পাউন্ড হয় আর হাতির বাচ্চার ওজন হয় ২৬০ পাউন্ড। হাতির বাচ্চা জন্মের কিছুক্ষণ পরই দাঁড়াতে পারে।
৬। হাতির নাক ও উপরের ঠোঁটের সমন্বয়ে হাতির শুঁড় গঠিত হয়। হাতির শুঁড় হাতির অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ও কার্যকরী অঙ্গ। এটি অনেক শক্তিশালী হয় যা দিয়ে গাছের ডালপালা চিরে ফেলতে পারে। পানি পান করার জন্য ও গোসলের জন্য ও শুঁড় ব্যবহার হয়। শুঁড় দিয়ে হাতি একবারে ১৪ লিটার পানি শোষণ করতে পারে। শরীরে পানি, বালি বা মাটি ছিটানোর জন্য শুঁড় ব্যবহার হয়। হাতি সাঁতার কাটতে পারে এবং ডুব সাঁতারের সময় শ্বাস নেয়ার জন্য শুঁড়ের সাহায্য নেয়।
৭। হাতির ইনসিজর দাঁত রূপান্তরিত হয়ে গজদন্ত হয় যা জীবনভর বৃদ্ধি পায়। পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ হাতির গজদন্ত বছরে ৭ ইঞ্চি বৃদ্ধি পায়। এশিয়ান মহিলা হাতির গজদন্ত থাকেনা।
৮। হাতির অনেক বেশি বড় কান থাকে যা শরীরের তাপ বিচ্ছুরিত হতে সাহায্য করে। হাতি আওয়াজের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। হাতির শব্দ এক মাইল দূরের অন্য হাতিরা শুনতে পায়। হাতি আনন্দ প্রকাশের জন্য কান নাড়ায়।
৯। হাতি অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করে। গোসল করা হাতির খুব প্রিয় কাজ। মেয়ে হাতির শরীর খারাপ (পিরিয়ড) হলে তারা সবসময় খুব ভোরে গোসল করে নেয় আর সারাদিন চুপচাপ থাকে। এমনকি ঐ সময় খাওয়া দাওয়াও ছেড়ে দেয়।
১০। হাতির ঘুম অনেক কম। মানুষের দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন কিন্তু হাতির ৪ ঘন্টা ঘুমালেই হয়। তারা বেশিরভাগ সময় দাড়িয়েই ঘুমায়। গভীর ঘুমের জন্য হাতি এক পাশে ফিরে শোয় এবং অনেক জোরে নাক ডাকে।
পরবর্তী খবর ভালোবাসার অপর নাম- মাশরাফি