নার্সারি ব্যবসা খুবই লাভজনক পেশা
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২৫শে নভেম্বর ২০১৭, শনিবার
| দুপুর ০২:০২
পণ্যবাজার
তারিকুল হাসান ।। ইট, পাথর ও কংক্রিটের যান্ত্রিক শহরে পিচঢালা রাস্তার পাশে হঠাৎ সাড়ি সাড়ি সবুজ গাছের ছোট-বড় নার্সারি দেখে মনে প্রশান্তি আসেনা এমন মানুষের জুড়ি মেলা ভার। কোটি মানুষের শহরে পরিবেশ বান্ধব নার্সারি ব্যবসা করে বছরে লাখ টাকা আয় করছেন শত শত নার্সারি ব্যবসায়ি। তাদের মধ্যে একজন বৃক্ষপ্রেমী শাহ আলম।
রাজধানির আগারগাও সিগনালের পাশে অবস্থিত অরণ্য নার্সারির স্বত্বাধিকার শাহ আলম পেশায় একজন প্রকৌশলী হলেও গাছের প্রতি ভালবাসা থেকে নার্সারি ব্যবসা করছেন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে। মাত্র দেড় লাখ টাকা দিয়ে নার্সারি ব্যবসা শুর করে, নিজের ভাগ্য বদলে ফেলছেন আলম। ফুল, ফল, ভেষজ এবং বনজ গাছের চারা ও গাছ বিক্রি মাসে এখন প্রতি মাসে তিনি আয় করেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
নার্সারি ব্যবসায় কেন আসলেন জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি গাছ খুব পছন্দ করি। ছোট বেলা থেকেই বাগান করার শখ ছিল আমার।প্রাইমারী স্কুল থেকেই ইচ্ছে ছিল, আমার একটা বড় বাগান হবে। সুন্দর পরিবেশ, মানুষের সেবার পাশাপাশি ভাল লাভের আশায় বাণিজ্যিকভাবে নার্সারি শুরু করি।”
গাছের ব্যবসায় আয়-রোজগার কেমন? তার জীবনে কি সফলতা এনে দিয়েছে এই গাছ জানতে চাইলে আলম আরও বলেন, “নার্সারি ব্যবসায় কোন দিন ১০ হাজার আবার কোন দিন ২-৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়। শ্রমিকের বেতন, কারেন্ট বিল, পানি, এবং অন্যান্য খরচ বাদে মাসে গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা আয় হয় তবে মৌসুমের সময় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় হয়।”
অরন্য নার্সারি ঘুরে দেখান আলম এবং নাম বলতে থাকেন বিভিন্ন গাছের। ফল, ফুল, ভেষজ এবং বনজ সব ধরনের গাছ আছে তার নার্সারিতে। ফলের মধ্যে আছে, আনার, মালটা, লেবু, আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, আমড়া, ডালিম, কুল এবং লিচু। ফুলের মধ্যে আছে, গন্ধরাজ, বেলি, হাসনাহেনা, জুঁই, কামিনি, গোলাপ, টগর। ভেষজ, সবজি এবং বনজ এর মধ্যে আছে, আমলকী, বহেরা, নিম, তুলসি, হরতকি, বাসক, বেগুন, টমেটো, মরিচ, মেহগনি, অর্জুন,বট ইত্যাদি।
শাহ আলমের সাথে কথোপকথনের সময় অরণ্য নার্সারিতে বনানীর লাফিং এলিফেনট কোম্পানির বিজ্ঞাপন কর্মকর্তা, আহম্মেদ তাজ আম গাছ কিনতে আসেন। তিনি বলেন,“বনানীতে গাছের দাম এখানকার তুলানায় অনেক বেশি, তাই এখানে এসেছি। এখানে রুপালি আমের চারা কিনছি ৮০ টাকা করে। এই একই জাতের কলমের চারা বনানিতে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়।”
আলমের নার্সারি এবং বাগানে গাছের পরিচর্যা ও বিক্রি করার জন্ন্য ৬ জনের লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। কথা হয় নার্সারির পরিচর্যাকারী জুয়েলের সাথে। তিনি বলেন, “এখানে মাসে ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করি।নার্সারিতেই থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিছে মালিক। নার্সারিতে কাজ করে অনেক ভাল আছি।”
নার্সারিতে গাছের পাশাপাশি সার, ঔষধ, টব, এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করছেন আলম। তিনি বলেন, “বাড়ির ছাদেও একটা ছোট বাগান আছে আমার। বাড়িতে খাওয়ার জন্য ফল ও শাকসবজির চাষ করি সেখানে। ভেজালের হাত থেকে বাঁচার জন্য, সুস্থ থাকার জন্য এবং পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য প্রত্যেকটি বাড়িতে, ছাদে, বেলকুনিতে গাছ লাগানো উচিৎ।”
আগের খবর ছেড়া নোটের সমাধান